যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ

দেশে কিছু ফেসবুক সেলিব্রিটি আছে, এরা কি করে সেলিব্রিটি হয়েছে সেটা অবশ্য আমি এখনও পরিষ্কারভাবে বুঝে উঠতে পারিনি। বুড়ো মানুষেরা অনেক কিছু বুঝতে পারেনা, জেনারেশনের সাথে আপডেট না থাকলে অনেক কিছু মিস হয়ে যায়। এই সেলিব্রেটিদের কাজ কারবার দেখি। একজন নিজের জীবনের সম্পর্কে মিথ্যা বলে ভাল উপদেশ পোষ্ট করে। প্রতিদিনই তার সাথে কিছু না কিছু ঘটে। রাস্তার তরকারী বিক্রেতা তাকেই উদ্ভট কিছু বলবে, রিকশাওয়ালা out-of-nowhere তাকেই বেদনার কথা শোনাবে, নয়ত তার চোখের সামনেই কিছু না কিছু ঘটবে প্রতিদিন। বর্তমানে তিনি ইভ্যালী প্যাচে ধরা খেয়েছেন। আবার আরেকজন ধর্ম নিয়ে পোষ্ট দিয়ে অনেক গালিটালি খেয়ে এখন মোটামুটি ঠাণ্ডা। আরেকজন আছেন যিনি নিজ পেশার মানুষদের পচিয়ে সেলিব্রেটি হয়েছেন এবং এখনও ফেসবুক সেলিব্রেটি স্ট্যাটাস ধরে রেখেছেন। আরও আছে, লিস্ট অনেক বড়।
 
কিন্তু এরকম ছ্যাবলামো মার্কা সেলিব্রেটি কেনও দেখতে হচ্ছে। কারন আসল সেলিব্রেটি যাদের হওয়ার কথা ছিল তাদের নাজেহাল অবস্থা। ৩ টার কম তারা বিয়ে করেননা, ড্রাগ নেওয়ার ছবি পোস্ট করেন, কেলেঙ্কারি করে পলিটিক্যালি বাঁশ খান, রাস্তায় মানুষ উত্যক্ত করে মার খান, ন্যাশনাল টেলিভিশনে লাফালাফি, ভাঙ্গাভাঙ্গি করেন and the list goes on and on and on. জীবনে চিন্তা করিনি এরকম লাইনও দেখতে হবে “বিয়ে করেছি, চুরি তো করিনি।” আবার দেখলাম “বিয়ে ব্যক্তিগত বিষয়”। No my friend, the moment you choose showbiz, your right to privacy is zero unless you are clever enough to maintain it. রঙ্গমঞ্চে নেমে মানুষের মতামত এড়িয়ে থাকব, এমনটা ভাবা পাগলের প্রলাপ।
 
এমনটা ছিলনা। আগে সেলিব্রেটিদের থেকে মানুষ শিখত, তাদের idealize করত। এখনও মাঝে মাঝে তাদের একটা ক্লিপ, একটা সাক্ষাতকার ভাইরাল হচ্ছে। তাদের এক এক জনের এক একটা মতাদর্শ ছিল। তারা দেখাত কিভাবে ব্যবহার করতে হবে মানুষের সাথে, তারা বলত কোন চিন্তাধারায় ভুল হয়ে যাচ্ছে। মানুষের কাছে নিজেকে প্রকাশের একটা ভঙ্গী ছিল। শুধু ব্যক্তিত্বের প্রেমে পরতে ইচ্ছা করত তাদের দেখে। বড় মনের মানুষ দেখা যেত, এখন কালো মনের মানুষ দেখা যাচ্ছে।
 
একটা প্রবাদ আছে না – “যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ।” জীবনের অর্ধেকে এসে আমি শঙ্কিত আমাকে হয়ত আরও দুইটা জেনারেশন গ্যাপ দেখতে হবে। অবশ্য আজকাল যে দ্রুত হারে জেনারেশন চেঞ্জ হচ্ছে তাতে ৪-৫ টা সিগনিফিক্যান্ট গ্যাপ দেখা লাগতে পারে। তাতে যে কি দেখব, আর কিভাবেই যে সহ্য করব সেটা ভেবেই আমি শঙ্কিত।
 

অতনু সোম
ফ্যাকাল্টি মেম্বার,
সিএসই ডিসিপ্লিন,
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।